ছবির নীল জামা পরা মানুষ দুজন বিংশ শতাব্দীর প্রত্নতত্ত্ববিদ। ম্যাথু স্টারলিং এবং ম্যারিয়ন স্টারলিং। সাদা জামা পরা মানুষটি স্থানীয় গাইড। ম্যাথুকে ওলমেক সভ্যতার আবিষ্কারক হিসেবে সবাই চেনেন। এরা দুজনেই Smithsonian's Bureau of American Ethnology-র অধিকর্তা ছিলেন। এই দম্পতি মেক্সিকোর কয়েকটি অঞ্চলে খোদাই করে পাথরের তৈরি এইরকম বড় বড় মূর্তি দেখতে পান। কার্বন ডেটিং দ্বারা প্রমাণিত হয় যে এই ধরণের মূর্তিগুলো তৈরি হয়েছিল ১২০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ থেকে ৪০০ খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ পর্যন্ত।
প্রতিটা মূর্তির আদলে আফ্রিকার মানুষের ছাপ স্পষ্ট লক্ষ্য করা যায়। বলা হয় বড় বড় পাথরের চাঁই এনে একেক জায়গায় বসানো হত। তারপর সেই পাথর কেটে ওলমেকরা এই ধরণের মূর্তি তৈরি করত। এই ধরণের মূর্তি তৈরি করে তারা কি বলতে চাইত তার অনেক ধরণের ব্যাখ্যা আছে। যুক্তি এবং কুযুক্তিও আছে। সে কথা পরে হবে।
ওলমেক সভ্যতার অনেক কিছুই জানা যায়নি। হঠাৎ করেই এই সভ্যতা হারিয়ে যায় ৩৫০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ। পাথরের তৈরি বিশাল বিশাল মূর্তি এই সভ্যতাকে আলাদা ভাবে চিনিয়ে দিতে সাহায্য করে। শিরস্ত্রাণ পরিহিত এই বিশাল মূর্তিগুলোর ওজন ছয় টন থেকে পঞ্চাশ টন। উচ্চতা পাঁচ ফুট থেকে বারো ফুট। ঠিক করে জানা যায়নি এই মূর্তিগুলো কাদের। তবে অনুমান করা হয় একহাজার বছরের এই সভ্যতার প্রভাবশালী শাসকদের চিহ্নিত করতে এই মূর্তিগুলি তৈরি হয়েছিল। ওলমেকদের হাতে তৈরি এইসব মূর্তি দেখে বোঝা যায় তাদের শিল্পীরা পাথরখোদাই শিল্পে নিপুণ ছিল।
ওলমেকদের প্রধান শহর ছিল সান লরেঞ্জো। ৯০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ মেক্সিকোর সান লরেঞ্জো শহর ছেড়ে ওলমেকরা চলে আসে লা ভেন্টা অঞ্চলে। লা ভেন্টায় ওলমেক নির্মিত পিরামিডও দেখতে পাওয়া যায়। সান লরেঞ্জো ও লা ভেন্টায় পাথরে খোদাই অসংখ্য আকৃতি পর্যটকদের মন কাড়ে।